Tuesday, March 8, 2016

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রসুণের ভূমিকা:



উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রসুণের ভূমিকা:
http://www.healthe24.com/

রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে যে, উপাদানটি দায়ী তা হলো এনজিওটেনসিন রসুনের উপাদান এনজিওটেনসিন প্রভাব কমিয়ে দিতে সক্ষম তাই নিয়মিত রসুন খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে


হৃতপিন্ডের সুরক্ষায় রসুন রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে রক্তনালিতে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল সহায়তা করে। রসুন হলো অ্যাসপিরিন ঔষুধের বিকল্প। এছাড়া রসুন রক্তের খারাপ কোলেস্টেলের মাত্রা কমিয়ে দেয় ফলে, হৃৎপিণ্ড সুরক্ষিত থাকে।


রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি ভাইরাল গুনে সমৃদ্ধ রসুন। তাই ভাইরাস জনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদির প্রকোপ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতা বাড়ায় রসুন।


এতো গেলো গুন বিচার। রসুনের কি কোনই খারাপ দিক নেই? রসুন সবার জন্যই ভালো, তবে রসুন যেহেতু রক্ত জমাট বাধতে বাধা দিয়ে অ্যাসপিরিনের মতো কাজ করে, সেহেতু গর্ভকালে রসুন আলাদা করে না খাওয়াই ভালো। এছাড়া বড় কোনো অস্ত্রপাচারের পরেও কাচা রসুন খাওয়ায় খানিকটা বিধিনিষেধ আছে। এছাড়া সবাই রসুন খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।


প্রতিদিন এক টুকরো করে রসুন খেলে অনেক ধরনের ক্যানসারের ঝুকি এড়ানো যায়। বিশেষত স্তন ক্যানসার এবং প্রস্টেট ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে।

উচ্চ রক্তচাপ একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত প্রায়। এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ দুটোই জরুরী। না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাৎ মৃত্যুরও ঝুকি থাকে। সাভাবিক রক্তচাপ হলো সেই বল, যার সাহায্যে রক্ত শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে। হৃতপিন্ডের পাম্পিং ক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ তৈরী হয়। রক্তচাপের কোনো একক নির্দিষ্ট মাত্রা নেই।বিভিন্ন বয়সের সংগে একেক জন মানুষের শরীরের রক্তচাপের মাত্রা ভিন্ন ও একই মানুষের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক এই রক্তচাপও ভিন্ন হতে পারে। উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। ঘুমের সময় এবং বিশ্রাম নিলে রক্তচাপ কমে যায়। সাধারনত বয়স যত কম, রক্তচাপও তত কম হয়। যদি কারও রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি হয় এবং অধিকাংশ সময় এমনকি বিশ্রামের সময়ও বেশি থাকে, ধরে নিতে হবে তিনি উচ্চ রক্তচাপের রোগী।

উচ্চ রক্তচাপ ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোন প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না এটাই রক্তচাপের সবচেয়ে ভীতিকর দিক যদিও অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের রোগীর বেলায় কোন লক্ষণ থাকে না, তবু রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা যেতে পারে অনিয়ন্ত্রিত এবং চিকিৎসা বিহীন উচ্চ রক্তচাপ থেকে মারাত্মক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে

উচ্চ রক্তচাপ থেকে জটিলতা:
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে  মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি অংগেযেমন হৃৎপিণ্ড, কিডনি, মস্তিষ্ক চোখঅনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারেদুর্বল হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না

অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলররক্ত নালির গাত্র সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা ইনফার্কশন হতে পারেএর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারেমস্তিস্ক স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারেএছাড়া চোখের রেটিনাতে রক্ত ক্ষরণের কারণে অন্ধও হতে পারে
উচ্চ রক্তচাপের কারণ

শতকরা ৯০জন রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোন নিদির্ষ্ট কারণ জানা যায় না ইহাকে প্রাইমারী বা এসেন্সিয়াল রক্তচাপ বলা হয় সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশী হয়ে থাকে কিছু বিষয় উচ্চ রক্ত চাপের আশঙ্কা বাড়ায়সাধারণত বংশানুক্রম, ধূমপান, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, অধিক ওজন, অলস জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মদ্যপান, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত উৎকন্ঠা ছাড়াও কিডনির রোগ, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার, ধমনীর বংশগত রোগ, অনেকদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি ব্যবহার, স্টেরয়েড জাতীয় হরমোন গ্রহণ, এবং ব্যথানাশক কিছু ঔষুধ সেবন করলে রোগ হতে পারে

উচ্চ রক্তচাপের ঝুকি কমাতে করণীয়:

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে উচ্চ রক্তচাপের ঝুকিঁ কমানো সম্ভব বংশগতভাবে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমানো সম্ভব নয় এক্ষেত্রে যেসব উপাদান নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলোর ব্যাপারে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত এজন্য অতিরিক্ত ওজন কমানো, খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন যেমন কম চর্বি কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার গ্রহণ, খাসি বা গরুর মাংস, কলিজা, মগজ, গিলা ডিম কম খেতে হবে কম তেলে রান্না করা খাবার এবং ননী তোলা দুধ, অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন সয়াবিন, ক্যানোলা, ভুট্রার তেল অথবা সূর্যমূখীর তেল খাওয়া যাবে বেশি আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়া ভালো আটার রুটি সুজি জাতীয় খাবার পরিমাণ মতো খাওয়া যেতে পারেলবণ নিয়ন্ত্রণ, মদ্যপান পরিহার, নিয়মিত ব্যায়াম, ধুমপান বর্জন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং মানসিক শারীরিক চাপ সামলাতে হবেএছাড়া নিয়মিত ভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিতযত দ্রুত রোগ সনাক্ত করা যায় তত দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করে রোগের জটিলতা থেকে এবং ভবিষ্যৎ বড় ধরণের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় রোগ সেরে যায় নাএকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়এজন্য নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, পরীক্ষা করাতে হবে, ঔষধ সেবন করতে হবে সাবধানে জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

No comments:

Post a Comment